Thursday 1 October 2009

বগুড়ায় যুবলীগের তাণ্ডব : ভাঙচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগ
তানোরে সাংবাদিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা
নয়া দিগন্ত ডেস্ক 30/09/09

বগুড়ার গাবতলীতে যুবলীগ নেতা নিহতের ঘটনায় দলীয় ক্যাডাররা তাণ্ডব চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে খবর ছাপায় রাজশাহীর তানোরে সাংবাদিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে বিএনপি নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।
বগুড়া অফিস ও গাবতলী সংবাদদাতা জানান, বগুড়ার গাবতলীতে যুবলীগ নেতা নিহতের ঘটনার জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার তার জানাজা শেষে যুবলীগ ক্যাডার ও তাদের সমর্থকরা আসামিদের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এতে ১৩টি বাড়ি, দোকান ভাঙচুর, গোয়ালঘর, খড়ের গাদা ও পাটখড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে চককাতুলী গ্রামের বাসিন্দা ও গাবতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন পার্শðবর্তী গ্রাম মধ্যকাতুলীতে সালিসি বৈঠকে চোরের পক্ষে কথা বললে কয়েকজন যুবক তাকে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্খায় তাকে প্রথমে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার সকালে তার মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় সাগরসহ ২১ জনকে আসামি করে নিহত মামুনের ছোট ভাই বকুল বাদি হয়ে গাবতলী থানায় একটি মামলা করেন। গতকাল মঙ্গলবার মামুনের নিজ বাড়ি চককাতুলীতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কর্মী-সমর্থক ও একদল গ্রামবাসী মধ্যকাতুলীতে গিয়ে মামলার প্রধান আসামি সাগর ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধরা সাগর ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করে। এতে সাগর ও জাহাঙ্গীরের বাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।
ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহসান উল্লাহর নেতৃত্বে পুলিশ বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে মিস্টার, রেজাউল ও হাসানসহ কমপক্ষে ১০ ব্যক্তি আহত হন।
পুলিশ সুপার হুমায়ন কবির জানান, পরিস্খিতি এখন শান্ত। ঘটনাস্খলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, সংবাদ প্রকাশের আভিযোগ এনে রাজশাহীর তানোর উপজেলার স্খানীয় একটি দৈনিকের প্রতিনিধির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গতকাল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের সমর্থক বাবু ও তার সহযোগীরা। এ ব্যাপারে ওই প্রতিনিধি সাইদ সাজু বাদি হয়ে দুইজনের বিরুদ্ধে গতকাল তানোর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাইদ সাজু তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সাইদ ফটো স্টুডিওতে অবস্খানকালে সেন্দুকাই গ্রামের বাবু (৩৩), তানোর চৌবাড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী মালশিরা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মুসলেম উদ্দীনের বিরুদ্ধে একটি দেনিক পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশের কারণে সাইদ সাজুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও নানা প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে এক পর্যায়ে হামলা করলে পাশের দোকানদাররা তাকে রক্ষা করেন।
এ ব্যাপারে তানোর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি ব্যবস্খা নেয়া হবে।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ বাজারে বিএনপি’র এক নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে আ’লীগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে আ’লীগের কর্মীরা। ঘটনাটি ঘটে গতকাল মঙ্গলবার। উপজেলার জয়াগ বাজারের কাঠ ব্যবসায়ী ও চাটখিল উপজেলা বিএনপি’র সহসভাপতি মো: মোবারক উল্লাহর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১০-১৫ জন আ’লীগ কর্মী এসে আ’লীগের সাইনবোর্ড লাগিয়ে তা দখল করে নেয়। মো: মোবারক উল্লাহ জানান, কয়েক দিন ধরে স্খানীয় আ’লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি দখলের চেষ্টা চালায়। আমি বিষয়টি সোনাইমুড়ী থানাকে অবহিত করেছি। গত সোমবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্খল পরিদর্শন করলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি।

No comments:

Post a Comment